Modern Indian History SAQ in Bengali
1. দেওয়ানি লাভ কী?
উত্তর: দেওয়ানি লাভ ছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার রাজস্ব আদায়ের আইনসংগত অধিকার। বক্সারের যুদ্ধে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জয়লাভের পর, 1765 সালে 12 ই আগস্ট দিল্লির বাদশাহ মোগল সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের সঙ্গে লর্ড ক্লাইভের সন্ধি শর্ত অনুসারে বার্ষিক 26 লক্ষ টাকার বিনিময়ে কোম্পানি বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার রাজস্ব আদায়ের ক্ষমতা অর্থাৎ দেওয়ানি লাভ করে।2. দ্বৈতশাসন ব্যবস্থা কী?
উত্তর: 1765 খ্রিস্টাব্দে দেওয়ানি লাভের পর বাংলার গভর্নর লর্ড ক্লাইভ বাংলায় এক অদ্ভুত ধরনের শাসন ব্যবস্থা চালু করেন। এই ব্যবস্থায় কোম্পানির হাতে সমস্ত ক্ষমতা থাকলেও রাজ্যশাসনের কোন দায়িত্ব কোম্পানি নেয়নি। অন্যদিকে নবাব রাজ্যশাসনের পূর্ণ দায়িত্ব পেলেও তাঁর হাতে কোন ক্ষমতা ছিল না।3. ছিয়াত্তরের মন্বন্তর কী?
উত্তর: 1176 বঙ্গাব্দ বা 1776 খ্রিস্টাব্দে দীর্ঘকালীন অনাবৃষ্টির পাশাপাশি দ্বৈতশাসন ব্যবস্থার কুফল হিসেবে বাংলায় এক সর্বগ্রাসী, ব্যাপক, বিভীষিকাময় দুর্ভিক্ষের সূচনা হয়, যা ছিয়াত্তরের মন্বন্তর নামে পরিচিত।4. দ্বৈতশাসন ব্যবস্থার অবসান কীভাবে হয়?
উত্তর: 1765 খ্রিস্টাব্দে দেওয়ানি লাভের পর লর্ড ক্লাইভ বাংলায় যে দ্বৈতশাসন ব্যবস্থার সূচনা করেন, এর ফলে বাংলা এক ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয়। ফলস্বরূপ বাংলা এক তৃতীয়াংশ মানুষ প্রাণ হারায়, অর্থ-সামাজিক জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে ও দেশের নিরাপত্তা ও আইনশঙ্খলা ব্যবস্থার অবনতি হয়।5. অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি কী?
উত্তর: ভারতবর্ষে কোম্পানির সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে লর্ড ওয়েলেসলি দেশীয় রাজ্যগুলি কে কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে আনার যে নীতি গ্রহণ করে তা অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি নামে পরিচিত।6. সলবাই সন্ধি কবে কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল?
উত্তর: 1782 খ্রিস্টাব্দে পেশোয়া দ্বিতীয় মাধব রাও এবং ইংরেজ গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হস্টিংসের মধ্যে সলবাইয়ের সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়েছিল।7. কর্নওয়ালিস কোড কী?
উত্তর: লর্ড কর্নওয়ালিস প্রবর্তিত শাসন বিভাগীয় ও বিচার বিভাগীয় সংস্কারগুলি পরবর্তীকালে এক সঙ্গে সংকলিত গ্রন্থ আকারে প্রকাশ করা হয়। লর্ড কর্নওয়ালিসের এই আইন সংকলনকেই কর্নওয়ালিস কোড বলা হয়।8. ভাইয়াচারি ব্যবস্থা কী?
উত্তর: পাঞ্জাব অঞ্চলে ভাইয়াচারি ব্যবস্থা প্রবর্তিত হয়। এই ব্যবস্থা অনুযায়ী প্রতিটি গ্রামের কৃষক, জনপ্রতিনিধি এবং কালেক্টরের সঙ্গে যৌথভাবে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যে খাজনা নির্ধারণ করা হত, তা ভাইয়াচারি ব্যবস্থা নামে পরিচিত। এই ব্যবস্থায় কয়েক বছর অন্তর অন্তর জমির খাজনার পরিমাণ বৃদ্ধি করার নিয়ম ছিল।9. পাটনি প্রথা কী?
উত্তর: বাংলা-বিহার-উড়িষ্যায় চিরস্থায়ী ব্যবস্থা প্রচলিত হওয়ার পর প্রজাদের কাছ থেকে খাজনা আদায়ের ঝামেলা থেকে মুক্ত থাকার জন্য কোনও কোনও জমিদার নির্দিষ্ট মূল্যের বিনিময়ে জমিদারির অংশ ছোটো ছোটো ভাগে বিভক্ত করে দিতেন, যা পাটনি প্রথা নামে পরিচিত।10. মহারাজ নন্দকুমারের ফাঁসি কেন হয়েছিল?
উত্তর: মহারাজ নন্দকুমার গোপনে ফরাসি সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং ইংরেজ কোম্পানির শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এই অপরাধে মহারাজ নন্দকুমারের ফাঁসি হয়েছিল।11. কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দুই মহিলা গ্রাজুয়েট কারা ছিলেন?
উত্তর: কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দুই মহিলা গ্রেজুয়েট হলেন চন্দ্রমুখি বসু ও কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়।12. ঝাঁসির রানি বিখ্যাত কেন?
উত্তর: ঝাঁসির রানি 1857 মহাবিদ্রোহের একজন নেত্রী ছিলেন। ব্রিটিশ সরকার স্বত্ববিলোপ নীতি প্রয়োগ করে ঝাঁসি দখল করতে চাইলে রানী লক্ষ্মীবাঈ ইংরেজদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। তিনি যুদ্ধে অসম সাহস ও বীরত্ব দেখান এবং শেষ পর্যন্ত তিনি সম্মুখ যুদ্ধে 1858 খ্রিস্টাব্দের 17 ই জুন মৃত্যুবরণ করেন। আরও পড়ুন:
13. বাঁশের কেল্লা কে নির্মাণ করেন?
উত্তর: উত্তর 24 পরগনা নারকেলবেরিয়া গ্রামে তিতুমীর ওরফে মির নিসার আলি বাঁশের কেল্লা নির্মাণ করেন।14. ইলবার্ট বিল কী?
উত্তর: 1873 খ্রিস্টাব্দে ফৌজদারি আইন অনুসারে ভারতীয় বিচারকগণ কোন ইংরেজ তথা শ্বেতাঙ্গদের বিচার করতে পারতেন না। বিচারব্যবস্থার এ বৈষম্য দূর করার জন্য লর্ড রিপনের পরামর্শে ভাইসরয়ের কাউন্সিলের আইন বিষয়ক সদস্য অর্থাৎ লর্ড রিপনের আইন সচিব ইলবার্ট একটি আইনের খসড়া প্রস্তুত করেন। এই আইন অনুসারে ভারতীয় বিচারকরাও শ্বেতাঙ্গদের বিচার করতে পারবেন এবং ভারতীয় বিচারকদের বেতন ক্ষমতা ইউরোপীয় বিচারকদের সমতুল্য হবে। এই খসড়া আইন ইলবার্ট বিল নামে পরিচিত।15. ইলবার্ট বিলের উদ্দেশ্য কী ছিল?
উত্তর: লর্ড রিপনের আইন সচিব ইলবার্টে আইনের খসড়া অর্থাৎ ইলবার্ট বিল এর উদ্দেশ্য ছিল –16. ইলবার্ট বিলে কী সংশোধন করা হয়?
উত্তর: ইলবার্ট বিল প্রকাশ হওয়ার পর ইংরেজ ও অংলো ইন্ডিয়ানরা ইলবার্ট বিলের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিবাদ জানায়। সর্বপ্রথম কলকাতা হাইকোর্টের ব্যারিস্টার ব্রানসনের নেতৃত্বে গঠিত হয় ডিফেন্স অ্যাসোসিয়েশন এবং এই সমিতির নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। ইউরোপীয়দের প্রতিবাদের চাপে সরকার বিলটি সংশোধন করতে বাধ্য হয় এবং নতুন সংশোধিত আইনে বলা হয় যে, ভারতীয় বিচারক কর্তৃক শ্বেতাঙ্গদের বিচার নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে শ্বেতাঙ্গ জুরির মতামত গ্রহণ বাধ্যতামূলক হবে।17. বঙ্গভঙ্গের জন্য লর্ড কার্জনের ঘোষিত কারণ কী ছিল?
উত্তর: লর্ড কার্জন 1905 সালে বঙ্গভঙ্গের জন্য যেসকল কারণ গুলো জানিয়েছিলেন –1. প্রশাসনিক সুবিধা: ভৌগলিক আয়তন বিচারে 1 লক্ষ 89 হাজার 900 বর্গমাইল এলাকা বিশিষ্ট বঙ্গপ্রদেশটি একজন গভর্নরের অধীনে শাসন করা অসুবিধাজনক বলে কারণ দেখিয়ে ব্রিটিশ বঙ্গ বিভাজন করেছিল।
18. বঙ্গভঙ্গের উদ্দেশ্য কী ছিল?
উত্তর: 1905 খ্রিস্টাব্দের 16 ই অক্টোবর লর্ড কার্জনের বঙ্গভঙ্গের উদ্দেশ্য ছিল –1. রাজনৈতিক চেতনাসম্পন্ন বাঙালি জাতিকে বিভক্ত করা।
2. কলকাতা কেন্দ্রিক চরমপন্থী জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের কু-প্রভাব থেকে ভারতের অন্যান্য অঞ্চলকে মুক্ত রাখা।
3. হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে সাম্প্রদায়িক বীজ বপনের মাধ্যমে ভারতের জাতীয়তাবাদকে দুর্বল করা।
19. কার্নাইল সার্কুলার কী?
উত্তর: 1905 সালে বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলনে ছাত্ররা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে। তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বয়কট করে এবং বিদেশি জিনিসের দোকানের সামনে পিকেটিং শুরু করে। ব্রিটিশ সরকার ভারতীয় ছাত্র সমাজকে বঙ্গভঙ্গ বিরোধী আন্দোলন ও স্বদেশী আন্দোলন থেকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্য 1905 খ্রিস্টাব্দে 10 ই অক্টোবর একটি আইন পাস করায়। এই আইনই কার্নাইল সার্কুলার নামে পরিচিত।20. গান্ধীজীর সত্যাগ্রহের মূল আদর্শ কী ছিল?
উত্তর: গান্ধীজী মনে করতেন সত্যাগ্রহ একটি নৈতিক শক্তি, যা সহজেই শত্রুকে জয় করতে পারে। গান্ধীজীর সত্যাগ্রহের মূল আদর্শ ছিল –1. সত্যের প্রতি একান্ত অনুরোধ।
2. অহিংস উপায়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা এবং প্রতিপক্ষের হৃদয় জয় করা।
আরও দেখুন:
Competitive Exam Mock Test
Number of questions (MCQ) – 10 Language – Bengali
21. বাঘাযতীন কোথায় ইংরেজদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হন?
উত্তর: 1915 খ্রিস্টাব্দের 9ই সেপ্টেম্বর উড়িষ্যার বালেশ্বরের কাছে বুড়িবালাম নদীর তীরে বাঘাযতীন ইংরেজদের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধে লিপ্ত হন।
22. নেহেরু রিপোর্ট কী?
উত্তর: ভারত সচিব বার্কেনহেড ব্যঙ্গ করে বলেছিলেন সংবিধান রচনা করার যোগ্যতা ভারতীয়দের নেই। তার প্রত্যুত্তরে 1928 খ্রিস্টাব্দে 28 শে ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে অনুষ্ঠিত এক সর্বদলীয় সম্মেলনে ভারতের ভবিষ্যৎ সংবিধান রচনার জন্য পন্ডিত মতিলাল নেহেরুর নেতৃত্বে নেহেরু কমিটি নামে 9 জন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই বছর লখনও সর্বদলীয় সম্মেলনে নেহেরু কমিটি ভারতের ভবিষ্যৎ সংবিধানের যে খসড়া পেশ করেন, তা নেহেরু রিপোর্ট নামে পরিচিত।23. ত্রিপুরী কংগ্রেস অধিবেশনে কী কী ঘটনা ঘটে?
উত্তর: 1939 খ্রিস্টাব্দে জাতীয় কংগ্রেসের ত্রিপুরি অধিবেশন যেসব ঘটনাগুলি ঘটেছিল সেগুলি হল –24. ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি কে গঠন করেন ও উল্লেখ্য সদস্য কারা ছিলেন?
উত্তর: মাস্টারদা সূর্য সেন বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সের বেশকিছু সক্রিয় সদস্যদের নিয়ে ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি নামে এক সমরবাহিনী গড়ে তোলেন।
25. মাস্টারদা সূর্য সেনের পরিকল্পনা কী ছিল?
উত্তর: মাস্টারদা সূর্য সেন তার অনুগামীদের নিয়ে একসঙ্গে বেশ কয়েকটি জায়গায় সশস্ত্র আক্রমণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। মাস্টারদার পরিকল্পনা অনুসারে স্থির হয় –1. অনন্ত সিংহ, গণেশ ঘোষ, লোকনাথ বল প্রমুখের নেতৃত্বে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন করা হবে।